একটি হৃদয়বিদারক সত্য গল্প থাইরয়েড ক্যানসার | A Heartbreaking True Story of Thyroid Cancer

একটি হৃদয়বিদারক সত্য গল্প থাইরয়েড ক্যানসার | A Heartbreaking True Story of Thyroid Cancer

সম্মানিত ভিউয়ার্স, আসসালামু আলাইকুম। আজ শুক্রবার, মাত্রই আমরা জুম্মার নামাজ শেষ করলাম। এখন আমি যাচ্ছি আমার দাদির কবর যিয়ারত করতে। আমার সাথে আমার আব্বু আছে। আমার আব্বু প্রায় শুক্রবারেই দাদির কবর যিয়ারত করেন, আমিও সাথে থাকি। তো আজ আমি শুনাবো আমার দাদীর মৃত্যুর গল্প। 

আমার দাদীর মৃত্যুর পুর্বে কি হয়েছিলোঃ

আমার দাদির মৃত্যুর পুর্বে  থাইরয়েড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় আমার আব্বুর খুব খারাপ সময় চলতেছিলো। আমি তখন অনেকটাই ছোট, কিছু সৃতি আমার মনে আছে আবার কিছু কিছু কথা আমার মা বাবার কাছে থেকে শুনেছি। আমার আব্বু সেই সময় ঢাকায় একটা ছোট চাকরি নিয়েছিলেন। অনেকদিন বাসায় আসেন নি। বড়ির কারো সাথে তিনি যোগাযোগ ও করতেন না। আমি ও আমার মা তখন নানার বাড়িতে ছিলাম। অনেকদিন পর তিনি একদিন ফেসবুক একাউন্ট লগইন করেন এবং একটি ম্যাসেজ দেখতে পান। সেখান থেকে আব্বু জানতে পারেন যে তার মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়েছে। খবরটা শোনার পর তিনি ছুটে চলে আসেন মায়ের কাছে। 

কতদিন চিকিৎসা হয়েছেন তিনিঃ 

প্রায় ৪ মাস আব্বু দাদিকে নিয়ে ঢাকা হাসপাতালে থাকেন। এসময় তার ঢাকার চাকরিটা চলে যায়। তিনি চাকরি ছারলেও মাকে ছারেন নি। দিন রাত দাদীর সেবা-যত্ন করে যান। কিছুদিন পর দাদীর গলায় অপারেশন করানো হয়। আমার বড়ো আব্বু ও অনেক টাকা খরচ করেছেন দাদির চিকিৎসা করতে। আমার ছোট চাচা আর্মিতে চাকরি করেন, তিনিও অনেক সাহায্য করেছেন, আমার ফুঁপি ও বেশ কিছু দিন দাদীর পাশে ছিলেন। দাদীর সেবা-যত্ন করেছেন। আমার ফুফাতো ভাই নাহিদ হাসান ইমন আমার দাদিকে সেবা যত্ন করেছেন দাদিকে রক্ত দিয়েছেন। মোট কথা সবাই তার নিজ নিজ যায়গা থেকে সাধ্যমতো চেস্টা করেছেন। দির্ঘ ৪ মাস ঢাকায় চিকিৎসা করানোর পরও দাদীর স্বাস্থের কোন উন্নতি হয়না। শেষে ডাক্তার রা আমার দাদিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেন। 

বাসায় কেমন চলছিলো আমার দাদীর সময়ঃ 

তখন আব্বু দাদিকে বাসায় নিয়ে আসেন। বাসায় আসার পর তিনি নিয়মিত স্যালাইন, ইনজেকশন আর অপারেশনের জায়গা আব্বু নিজে হাতে ড্রাসিং করে দিতেন। আমার দাদীও তার সব কাজের জন্য আমার আব্বুকেই ডাকতো। আমার আব্বু কে কখনো বিরিক্ত হতে দেখিনি। এভাবেই চলছিলো দিনগুলি। প্রতিটা দিন যায় আর বাসার সবাই আতংকে থাকি। কখন যে কি হয়ে যায়। বাসায় আসার প্রায় ১ মাস পর আমার দাদী আমার আব্বুর হাতের উপরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

যখনই আব্বু দাদীর কবর যিয়ারত করেন প্রতিবার ই আমি তার চোখে পানি দেখি। আব্বুর চোখে পানি দেখলে আমার ও চোখে পানি চলে আসে। ভিউয়ার্স, আপনারা আমার দাদীর জন্য দোয়া করবেন আমার দাদী যেন জান্নাতবাসি হতে পারেন। 


এ বিষয়ে আমার একটা ভিডিও আছে - এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মেঘাই ঘাট সিরাজগঞ্জ জেলার এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নাম - Meghai Ghat is the name of a natural beauty of Sirajganj district

আমার নানীর বাড়ির পাশে পুরাতন ঐতিহ্য চিকাশি মরছা | Old tradition Chikashi Morcha | Vlog With Talha

খেরুয়া মসজিদ | শেরপুর বগুড়া | kherua masjid sherpur bogra | Vlog With Talha